ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) সম্পর্কে বক্তব্য
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি ওয়া নুছাল্লিমু আলা রাসূলিহি ওয়া আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাঈন। আম্মা বা'দ। উপস্থিত আজকের সভার সম্মানিত সভাপতি, উপস্থিত বিশেষ অতিথি ও প্রিয় শিক্ষার্থী বৃন্দ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ। আজকের বক্তব্যের বিষয় হলো- ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি ওয়া নুছাল্লিমু আলা রাসূলিহি ওয়া আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাঈন। আম্মা বা'দ।
উপস্থিত আজকের সভার সম্মানিত সভাপতি, উপস্থিত বিশেষ অতিথি ও প্রিয় শিক্ষার্থী বৃন্দ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ।
আজকের বক্তব্যের বিষয় হলো- ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.)
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা,
ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) আরবী শব্দ। এখানে ঈদ শব্দের অর্থ খুশি, মীলাদুন্নবী শব্দের অর্থ নবীর জন্ম। সুতরাং ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) শব্দের অর্থ হলো- নবীর জন্ম উপলক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করা।
পরিভাষায় সহজ করে বলা যায়, শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম দিনকে স্মরণ করে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী মুসলমানগন শরীয়ত সম্মতভাবে যে সকল অনুষ্টান পালন করেন তাই হলো ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল।
প্রিয় বন্ধুগণ,
আল্লাহ আমাদের প্রতি কতই না এহসান করেছেন আমাদের মাঝে সর্বশ্রেষ্ট সৃষ্টি তাঁর হাবীব ﷺ কে আমাদের মধ্যে প্রেরণ করেছেন। আর মহানবী সাঃ যে আমাদের প্রতি আমাদের রবের মহান অনুগ্রহ তা আমরা আল্লাহর পবিত্র বাণী থেকে বুঝতে পারি। আবার এই অনুগ্রহ প্রাপ্তির পর কি করা কর্তব্য সেই নির্দেশও আল্লাহপাক দিয়েছেন। তিনি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘোষণা করতে বললেন–
قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا -
অর্থ- ‘হে নবী সাঃ! আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে খুশি প্রকাশ কর।’
অর্থাৎ খুশি প্রকাশ করার মাধ্যমে আমার নেয়ামত সমুহের আলোচনা কর এবং শুকরিয়া আদায় কর।
তাই নির্বিঘ্নে ও নিঃসংকোচে বেশি বেশি করে ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) অর্থাৎ নবীর আগমনের খুশিতে আল্লাহর হামদ ও নবীজির আলোচনার মাহফিল করা উচিত।
এজন্য মীলাদুন্নবী (সা:) মাহফিল করা মুসলমান জাতির জন্যে, বিশেষ করে রাসূল প্রেমিকদের জন্য এক বিশেষ গৌরবের বিষয়। ৫৭০ সালের ১২ই রবিউল আউয়ালে রচিত হয়েছিল এই মহা গৌরবময় ইতিহাস। ঐ দিনের সুবহে সাদিক এর সময় দুজাহানের বাদশা, নবীকুল শিরমনি, খাতামুনন্নাবীয়্যিন হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সমস্ত জগৎ আলোকিত করে এই ধূলির ধরণীতে তাশরিফ এনেছিলেন। আমার প্রিয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ভাষায়-
‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এলোরে দুনিয়ায়, আয়রে সাগর আকাশ বাতাস দেখবি যদি আয়। ২
ধূলির ধরা বেহেশতে আজ, জয় করিল দিলরে লাজ, আজকে খুশির ঢল নেমেছে ধূসর সাহারায়।’
ঐ দিন সমস্ত জগত খুশি হলেও একজন অখুশি ছিল, সে হলো অভিশপ্ত শয়তান। এজন্য সায়্যিদুল কাওনাইন এর আগমনে খুশি প্রকাশ করা প্রকৃত মুমিন-মুসলমানের কর্তব্য। এই মহান দিনটিকে আমরা ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করি।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা,
হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানবতার মহান দূত। তিনি আমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে একজন ভালো মানুষ হওয়া যায়, কীভাবে সমাজের সেবা করা যায়। তিনি আমাদেরকে ভালোবাসা, করুণা, সহানুভূতি, ক্ষমাশীলতা এবং সত্যবাদিতার শিক্ষা দিয়েছেন।
আমরা সবাইকেই হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুন্নতের ওপর আমল করা উচিত। তাঁর জীবনী অধ্যয়ন করা উচিত। তাঁর সম্পর্কে বেশী বেশী আলোচনা শুনা উচিত। তাঁর বাণী আমাদের জীবনে গ্রহণ করা উচিত। তাঁর আদর্শ আমাদের জীবনের আলোকবর্তিকা হওয়া উচিত।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমরা আজকের শিক্ষার্থীরাই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ। আমাদের হাতেই দেশের ভাগ্য। তাই আমাদেরকে ভালো মানুষ হতে হবে। দেশের জন্য কিছু করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে তোমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
আর এ সবই সম্ভব রাসুল সা. এর অনুসরণ ও অনুকরণের মাধ্যমে। আমরা সবাই মিলে দোয়া করি যেন আল্লাহ পাক আমাদেরকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুন্নতের ওপর আমল করার তৌফিক দান করেন। আমাদের দেশকে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং কল্যাণে ভরে রাখেন। আমিন।