ইসলামের কন্ঠইসলামের কন্ঠ
সম্পাদকীয়আর্কাইভআমাদের পরিচিতিলেখা পাঠানোর নিয়মাবলীযোগাযোগের মাধ্যম
হাদীস শরীফ

আইয়্যামে তাশরীক ও তাকবীরে তাশরীক

আল্লাহ তাআলা তাঁর হাবিব (ﷺ) এর উছিলায় আমাদেরকে কিছু দিন ও রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যেগুলোর মর্যাদা ও গুরুত্ব বছরের অন্যান্য দিন ও রাত থেকে অনেক গুন বেশি। তার মধ্য অন্যতম হচ্ছে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ ও তার পরের তিনদিন। এই দিনগুলির মধ্যে বেশি বেশি তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠ করে রবের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করার অন্যতম একটি সুবর্ণ সুযোগ। আইয়্যামে তাশরীক এর পরিচয়জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের পরের তিনদিন তথা এগার, বার ও তের তারিখ হচ্ছে আইয়্যামে তাশরীক।

মুফতি মুহাম্মাদ আকতার আল-হুসাইন
আইয়্যামে তাশরীক ও তাকবীরে তাশরীক

আল্লাহ তাআলা তাঁর হাবিব (ﷺ) এর উছিলায় আমাদেরকে কিছু দিন ও রাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যেগুলোর মর্যাদা ও গুরুত্ব বছরের অন্যান্য দিন ও রাত থেকে অনেক গুন বেশি। তার মধ্য অন্যতম হচ্ছে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ ও তার পরের তিনদিন। এই দিনগুলির মধ্যে বেশি বেশি তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠ করে রবের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করার অন্যতম একটি সুবর্ণ সুযোগ। আইয়্যামে তাশরীক এর পরিচয় জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের পরের তিনদিন তথা এগার, বার ও তের তারিখ হচ্ছে আইয়্যামে তাশরীক। এই দিনগুলোকে উক্ত নামে নামকরণ করার অন্যতম কারণ হচ্ছে- তাশরীক শব্দটি তাশরীকুল লাহম থেকে সংগৃহীত। অর্থ হচ্ছে, গোশতকে টুকরো করে রোদে শুকানো। এজন্য জিলহজ্জের দশ তারিখ তথা কুরবানীর দিনের পরের তিনদিন আরবরা কুরবানীর গোশতকে রোদে শুকাতো। তখন থেকেই এই দিনগুলো আইয়্যামে তাশরীক নামে পরিচিত। (লিসানুল আরব ও ফাতহুল বারী) তাকবীরে তাশরীক এর সূচনাঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ইসলামের বিভিন্ন আমল বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিচারণে হয়ে থাকে। যেমন সাফা-মারওয়ায় সায়ী করা, কুরবানী করা, জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ প্রভৃতি আমল হযরত ইব্রাহীম, হাজেরা ও ইসমাঈল (আ.) এর স্মৃতিচারণে হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে তাকবীরে তাশরীক এর ঐতিহাসিক একটি সূচনা রয়েছে। যার স্মৃতিচারণ স্বরূপ এখনো তাকবীরে তাশরীক এর প্রচলন চলে আসছে। বর্ণিত আছে, যখন হযরত ইব্রাহীম (আ.) তার পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.) কে আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করতে উদ্যোগ নিলেন, তখন হযরত জিব্রাঈল (আ.) একটি দুম্বা নিয়ে হাজির হয়ে বললেন- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার। অত:পর হযরত ইব্রাহীম (আ.) বললেন- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। তা শুনে হযরত ইসমাঈল (আ.) বললেন- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। এরপর থেকেই এটি ইসলামী শরীয়তের একটি বিধান হিসাবে নির্ধারিত হয়ে যায়। (তাফসীরে কুরতুবী, এনায়া ও শামী) তাকবীরে তাশরীক এর গুরুত্ব ও ফযীলতপ্রতিবছর ৫ দিন ব্যাপি পালনকৃত বিশেষ এই আমলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই তাকবীরের মাধ্যমে মুমিনের দিলে তাওহীদের শিক্ষাকে আরো মজবুত ও শাণিত করতেই অধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকির করা একান্ত কর্তব্য। ইরশাদ হচ্ছে-وَاذْكُرُوا اللّٰهَ فِیْۤ اَیَّامٍ مَّعْدُوْدٰت."আর তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিন সমূহে"। (সূরা আল-বাকারাহ ২০৩) অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে-ويذكروا اسم الله فى أيام معلومات."যাতে তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করে"। (সূরা আল-হজ্জ ২৮) এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে আইয়্যামে তাশরীক। দলিল হচ্ছে সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে-ويذكروا اسم الله فى أيام معلومات - أيام العشر، والأيام المعدودات - أيام التشريق."এই আয়াতদ্বয়ে নির্দিষ্ট দিনগুলির দ্বারা আশারায়ে যিলহজ্জ এবং নির্দিষ্ট দিন দ্বারা আইয়্যামে তাশরীক উদ্দেশ্য। (ফাতহুল বারী দ্বিতীয় খন্ড)বিশেষ করে এই দিনগুলোতে আল্লাহর যিকিরের প্রতি আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ সম্পর্কে হযরত আল্লামা খাত্তাবী (র.) বলেন- أن الجاهلية كانوا يذبحون لطواغيتهم فيها فشرع التكبير فيها إشارة إلى تخصيص الذبح له وعلى اسمه عز و جل.জাহেলী যুগের লোকেরা যুগ যুগ ধরে তাদের কথিত প্রভুদের নামে পশু-প্রাণী উৎসর্গ করত। এর প্রতি উত্তরে মুমিনদের প্রতি আদেশ করা হয়েছে তারা যেন আল্লাহর যিকির ও তাকবীরের মাধ্যমে তাওহীদ ও আনুগত্যের ঘোষণা দান করে। আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ। তাঁর কোনো শরীক নেই। তিঁনি ছাড়া কারো নামে প্রাণী উৎসর্গ করা যাবে না। কারণ তা সুস্পষ্ট শিরক। (ফাতহুল বারী দ্বিতীয় খন্ড)উক্ত কিতাবে আরো রয়েছে-وسر كون العبادة فيها أفضل من غيرها أن العبادة فى أوقات الغفلة فاضلة على غيرها، وأيام التشريق أيام غفلة فى الغالب. فصار للعابد فيها مزيد فضل على العابد فى غيرها كمن قام فى جوف الليل وأكثر الناس نيام.অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিনগুলায় ইবাদাত অধিক ফযীলতপূর্ণ হওয়ার রহস্য হলো যে, অন্য সময় অপেক্ষা গাফলতির সময়গুলোতে ইবাদাতের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। এবং সাধারণত তাশরীকের দিনগুলো (যা ঈদের পরদিন থেকেই শুরু হয় এবং যে দিনগুলোয় রোযা রাখা হারাম) হলো গাফলতির দিন। তাই অন্যান্য সময় ইবাদাতকারীর চাইতে গাফলতির সময়ে ইবাদাতকারীর অধিক শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে, যেমনিভাবে বেশিরভাগ মানুষ ঘুমন্ত থাকাবস্থায় (যা মূলত গাফলতির সময়) শেষ রাত্রিতে নামায আদায়কারীর ফযীলত রয়েছে। (ফাতহুল বারী দ্বিতীয় খণ্ড)আরো বর্ণিত হয়েছে-وفى أفضلية أيام التشريق نكتة أخرى: وهى أنها وقعت فيها محنة الخليل بولده ثم مُنّ عليه بالفداء. فثبت لها الفضل بذلك.আইয়্যামে তাশরীক অধিক ফযিলতপূর্ণ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো যে, এই দিনগুলোতে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তার সন্তানকে আল্লাহর রাস্তায় কুরবানীর পরীক্ষা দিয়ে জান্নাতি একটি জন্তুর বিনিময়ে আল্লাহর অনুগ্রহে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এর দ্বারাই আইয়্যামে তাশরীকের ফযীলত প্রমাণিত হয়। (ফাতহুল বারী দ্বিতীয় খণ্ড)জিলহজ্জের শুরু হতে বেশি বেশি যিকিরের যে আদেশ কুরআনে এসেছে এ ব্যাপারে হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে যে, নবী করিম (ﷺ) বলেছেন-ما من أيّامٍ أعْظَمُ عندَ اللَّهِ ولا أحَبُّ إليهِ فيهنَّ العملُ من هذِه الأيّامِ العشرِ فأكثِروا فيهنَّ التَّحميدَ والتَّهليلَ والتَّكبيرَ."আল্লাহর নিকট আমলের দিক থেকে আশরায়ে জিলহজ্জ হতে শ্রেষ্ঠ ও অধিক প্রিয় কোনো দিন নেই। অতএব তোমরা এতে তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর বেশি বেশি করো"। (মুসনাদে আহমদ) তাকবীরে তাশরীক কখন থেকে দিবেন হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন-كان رسولُ اللهِ (ﷺ) يُكبِّرُ في صلاةِ الفجرِ يومَ عرفةَ، إلى صلاةِ العصرِ من آخِرِ أيّامِ التَّشريقِ، حين يُسلِّمُ من المكتوبات."রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরাফার দিন ফযরের ফরয নামাযের সালাম ফেরানোর পরে তাকবীরে তাশরীক পড়া শুরু করতেন এবং আইয়্যামে তাশরীকের শেষ দিন আসরের নামায পর্যন্ত পড়তেন"। (সুনানে দারাকুতনী) তাকবীরে তাশরীক কিভাবে পাঠ করবেন তাকবীরে তাশরীক বিভিন্ন শব্দে বিভিন্ন কিতাবে এসেছে। তবে সর্বোত্তম ও প্রসিদ্ধ মত হল হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যেটা বর্ণনা করেছেন- اللهُ أكبرُ اللهُ أكبرُ - لا إلهَ إلا اللهُ والله أكبرُ - الله أكبرُ وللهِ الحمدُ."আল্লাহু আকাবার আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ"।(ইরওয়াউল গালিল) তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীরের ফযীলত তাহমীদ হলো আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও শুকরীয়া জ্ঞাপন করা। আল্লাহ তাআলার প্রশংসা বা শুকরীয়া আদায় করলে তিঁনি বান্দার উপর নিয়ামতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ তাআলা প্রশংসাজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে আল-হামদুলিল্লাহ বলার অগণিত সওয়াব বর্ণিত আছে। হাদীস শরীফে এসেছে- "আল-হামদুলিল্লাহ নেকীর পাল্লাকে পরিপূর্ণ করে"।তাহলীল তথা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হলো তাওহীদের বাণী। তাহলীলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের ঘোষণা প্রচারিত হয়। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা ইসলামের শাখাসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। এ প্রসঙ্গে হাসীস শরীফে এসেছে- "ঈমানের ৭০ এর অধিক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোত্তম হলো- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা। আর সর্বনিম্ন হচ্ছে- রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা"। (সহীহ মুসলিম) তাকবীর তথা আল্লাহু আকবার বলা হলো আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব ও বড়ত্ব ঘোষণা করা। আল্লাহ তাআলা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করার আদেশ প্রদান করেছেন- وَرَبَّکَ فَکَبِّرۡ"আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর"। (সূরা মুদ্দাসসির ৩) আল্লাহু আকবার আল্লাহ তাআলার নিকট প্রিয় বাক্যসমূহের মধ্যে অন্যতম। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- চারটি বাক্য আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। তা হলো- সুবহান আল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং আল্লাহু আকবার। এছাড়াও বিভিন্ন হাদীসে তাকবীরের গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামদের আমলরাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবীগণ এই দিনগুলোতে সর্বদা আল্লাহু আকবারের ধ্বনি তুলতেন। হযরত ইবনে উমর (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) এর আমল ছিল- يخرجان إلى السوق فى أيام العشر يُكبّران و يكبّر الناس بتكبيرهما."বাজারে গিয়ে তাকবীরের আওয়াজ তুলতেন। শুনে শুনে লোকেরাও তাদের সাথে তাকবীরের সুর তুলত"। (সহীহ বুখারী)সুতরাং নিঃসন্দেহে প্রতীয়মান- তাকবীর, তাহলীল ও তাহমীদ সমন্বিত ‘তাকবীরে তাশরীক’ অত্যন্ত গুরুত্ব ও ফযীলতপূর্ণ একটি আমল। মাসআলায়ে তাকবীরে তাশরীকতাকবীরে তাশরীকের কিছু মাসআলা রয়েছে যেগুলো জানা প্রত্যেক নামাযী ব্যাক্তির জন্য জরুরী। তাই কিছু মাসআলা নিচে উপস্থাপন করা হলো। হযরত ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (র.) মতে ফরয নামায আদায়কারী প্রত্যেক মুসলমান, চাই সে পুরুষ হোক কিংবা মহিলা হোক, গোলাম হোক, কিংবা স্বাধীন হোক, মুসাফির হোক, কিংবা মুকীম হোক, একাকী আদায়কারী হোক কিংবা জামায়াতে আদায়কারী হোক বা মাসবুক হোক সবার জন্য তাকবীরে তাশরীক ওয়াজীব। (নুরুল ইজাহ, মারাকিল ফালাহ ও দুররুল মুখতার) ৯ জিলহজ্জ ফযরের নামায হতে ১৩ জিলহজ্জ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পরক্ষণেই অনতিবিলম্বে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজীব। (নুরুল ইজাহ ও দুররুল মুখতার)ছাহেবাইনের মতে একবার বলা ওয়াজীব। এর চেয়ে বেশি বলা উত্তম। (দুররুল মুখতার) পুরুষগন উচ্চ আওয়াজে আর মহিলাগন নিম্ন আওয়াজে তাকবীর পাঠ করবেন। (তাহতাবী) ইমাম সাহেব যদি তাকবীর পাঠ করতে ভূলে যান তাহলে যে কোন মুক্তদি তাকবীর পাঠ করবেন। (হেদায়া) মুস্তাহাব হলো মুক্তাদীগন ইমাম সাহেবের সাথে তাকবীর বলবেন। তবে কেউ যদি ইমাম সাহেবের আগেই শুরু করে দেন তাহলে কোন গুনাহ হবে না। (আলমগীরী) যদি সবাই অথবা কোন একজন তাকবীর বলতে ভুলে যাওয়ার পর মসজিদে থাকা অবস্থায় মনে পড়ে তাহলে তাকবীর আদায় করে নিবেন। আর যদি মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় তাহলে এই ওয়াজীব ছুটে যাবে। এই ওয়াজীবের কোনো কাযা নেই এবং ওয়াজীব ছেড়ে দেওয়ার কারণে ঐ ব্যক্তি গুনাহগার হবে। (মাবসূত সারাখসী, বাদায়েউস সানায়ে ও ফাতাওয়া হিন্দিয়া) আইয়ামে তাশরীকের কোনো নামায কাযা হয়ে গেলে ঐ দিনগুলোর মধ্যে তার কাযা আদায় করলে তাকবীর বলা ওয়াজীব। কিন্ত এই কাযা পরবর্তী অন্য সময় আদায় করলে বা আইয়্যামে তাশরীকের আগের কাযা নামায ঐ দিনগুলোতে আদায় করলে তাকবীর বলা ওয়াজীব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ও আল-মুহীতুল বুরহানী) আইয়্যামে তাশরীকের পাঁচ দিনের মধ্যে কোন নামায কাযা হয়ে গেলে তা যদি এ পাঁচ দিনের মধ্যেই আদায় করা হয় তাহলে এ কাযা নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক বলতে হবে। কিন্তু পূর্বের কোন কাযা নামায আইয়্যামে তাশরীকে আদায় করলে তাকবীরে তাশরীক বলবে না। (আল-বাহরুর রায়েক, আল-মুহীতুল বুরহানী ও ফাতাওয়া হিন্দিয়া) ফরয নামাযের সালাম ফিরানোর পর যদি কারো ওযু নষ্ট হয়ে যায় তাহলে নতুন ওযু করা লাগবে না। ওযু ছাড়া তাকবীর পাঠ করে নিবেন। (আলমগীরী)আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই ফযীলতপূর্ণ দিন ও রাত সমূহে তাঁর নামের যিকির, তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

-------মুহাম্মাদ আকতার আল-হুসাইন